শালীনতার আরবি প্রতিশব্দ 'তাহযিব' (اهْدِيبُ) যার অর্থ ভদ্রতা, নম্রতা ও লজ্জাশীলতা। আচার-আচরণে, কথাবার্তায়, বেশভূষায় ও চালচলনে মার্জিত পন্থা অবলম্বন করাকে শালীনতা বলে।
গুরুত্ব
শালীনতা মানুষের একটি মহৎগুণ। এটির গুরুত্ব অপরিসীম। শালীনতাবোধ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। শালীনতা আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে সাহায্য করে। আচার-ব্যবহারে শালীন ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। শালীন পোশাক-পরিচ্ছদ সৌন্দর্যের প্রতীক। শালীন ও ভদ্র আচরণের মাধ্যমে বন্ধুত্ব ও হৃদ্যতা সৃষ্টি হয়। সমাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখতে শালীনতার প্রয়োজন সর্বাধিক। শালীনতাপূর্ণ আচার-ব্যবহার সম্প্রীতি ও সৌহার্দের চাবিকাঠি। অশোভন বা অশালীন পোশাক-পরিচ্ছদ ও আচরণ অনেক সময় সমাজে বিপর্যয় ডেকে আনে, সমাজে অশান্তির সৃষ্টি করে। নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটায়।
শালীনতাপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পক্ষান্তরে অভদ্র বা অশালীন আচরণ বন্ধুকেও দূরে ঠেলে দেয়। মানুষ অশালীন ব্যক্তিকে পছন্দ করে না। তার সাহচর্য পরিত্যাগ করে। মহানবি (স.) বলেন, 'মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে।' (বুখারি) অশালীন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা কখনোই পছন্দ করেন না। বরং অশালীন ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা ঘৃণা করেন। এ সম্পর্কে মহানবি (স.)-এর বাণী:
إِنَّ اللهَ يَبْغَضُ الْفَاحِشَ الْبَنِي
অর্থ: 'নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা অশালীন ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন।' (তিরমিযি)
শালীনতা মানুষের জীবনে অপরিহার্য বিষয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে শালীনতা শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের সূরা লুকমানে উল্লেখ আছে যে, হযরত লুকমান (আ.) তাঁর পুত্রকে শালীনতা শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন, "হে পুত্র, অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না। পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে চলো না, কারণ আল্লাহ কোনো উদ্ধত অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। তুমি পদচারণ করবে সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করবে। নিশ্চয়ই স্বরের মধ্যে গাধার স্বর সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।" (সূরা লুকমান, আয়াত ১৯)
শালীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শালীনতা অবলম্বন করে চলা উচিত। এতে জীবন সুন্দর ও মধুময় হয়ে ওঠে। সমাজেও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
দলগত কাজ: শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে শালীন আচরণের সুফলগুলো পোস্টারে লিখে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। |
বাড়ির কাজ: 'অশালীন পোশাক-পরিচ্ছদ ও আচরণ বিপর্যয় ডেকে আনে।' ব্যাখ্যা কর। |
Read more